নিউজ ডেস্ক: স্বামীর মারপিটের শিকার হয়ে রাস্তায় পড়েছিলেন গৃহবধূ ইতি খানম। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে। এরপর পুলিশ প্রহরাতেই স্বামীর বাড়িতে ফিরেছেন ইতি। তার নিরাপত্তা ও সহযোগিতার জন্য দুজন চৌকিদার নিযুক্ত করা হয়েছে। আর এসবই ঘটেছে নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজার হস্তক্ষেপে। গৃহবধূ ইতির স্বামী তিতাস কাজী পলাতক।
সূত্র জানায়, উপজেলার ইতনা গ্রামের হারুন অর রশিদের মেয়ে ইতি খানমের বিয়ে হয় ২০১৮ সালে। বর একই গ্রামের মামাতো ভাই তিতাস কাজী। দুই পরিবারের বিরোধ থাকায় দাম্পত্য জীবন শুরু থেকেই ছিল অশান্তির। তিতাস কাজী ঢাকায় একটি কোম্পানিতে কর্মরত। গত ১ জুন স্ত্রীকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেন তিতাস। আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ইতি অচেতন অবস্থায় পড়েছিলেন রাস্তায়। আশপাশের লোকজন পুলিশে খবর দিলে তাকে উদ্ধারের ব্যবস্থা হয়। এদিকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলেও স্বজনরা তার খোঁজ নিচ্ছিলেন না। এ পরিস্থিতির মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতির করুণ অবস্থার কথা জানতে পারেন সংসদ সদস্য মাশরাফি। আর এমপির নির্দেশনার পর পরিস্থিতি পাল্টে যায় দ্রুত। অবশেষে নিজ ইচ্ছায় স্বামীর বাড়িতে ফিরেছেন ইতি। সোমবার দুপুরে লোহাগড়া থানা পুলিশ হাসপাতাল থেকে গাড়িতে করে ইতিকে স্বামীর বাড়িতে পৌঁছে দেয়। অসুস্থ ইতির দেখভালের জন্য একজন নারী গ্রাম চৌকিদার নিযুক্ত করা হয়েছে সার্বক্ষনিক থাকার জন্য। আরেকজন চৌকিদার তার বাজারঘাট করে দেবে।
নির্যাতনের শিকার ইতি খানম বলেন, ‘পুলিশের সহায়তায় আমি হাসপাতালে ভর্তি হতে পেরেছি। সেই পুলিশই আমাকে আবার বাড়িতে তুলে দিয়েছে। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। এমপি মাশরাফি আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি লোকজন পাঠিয়ে কথা বলেছেন। যেকোনো বিপদে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। সন্তান প্রসবের সময়ে সব খরচ বহন করবেন বলে জানিয়েছেন।’
লোহাগড়া থানার ওসি সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, ‘স্বামী নির্যাতন করে ইতি খানমকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন। বাবার বাড়ির লোকজনও কেউ খোঁজ নেননি। ইতি স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করতে রাজি নন। তার ইচ্ছায় সোমবার আমি নিজে গিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও লোকজনের উপস্থিতিতে স্বামীর বাড়িতে তুলে দিয়ে এসেছি। এমপি সাহেব সরাসরি বিষয়টি দেখভাল করছেন।’
ইতির বাবা হারুন অর রশিদ বলেন,‘তিতাসের পরিবার দাঙ্গাবাজ। তাই আমরা ভয়ে মেয়ের খোঁজ নিতে পারিনি। এখন মাশরাফি আর পুলিশের সহায়তায় আমার মেয়েটা শ্বশুর বাড়ি ফিরতে পেরেছে। এতেই আমরা খুশি।’
ইতির শ্বশুর বক্কার কাজী বলেন, ‘আমরা আলাদা থাকি। নির্যাতনের কোন ঘটনা জানিনা। এখন যেটা হয়েছে সেটা ভালোই হয়েছে।’
স্থানীয় সৌমেন বসু বলেন, ‘আমাদের এমপি সাহেব ঘটনাটি শোনার পরপরই অসুস্থ্য ইতির সাথে নিজে কথা বলেছেন। তাকে সাহস দিয়েছেন। সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।’