নিউজ ডেস্ক: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তাণ্ডব্যে দেশের বহু অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। প্রাণহানির ঘটনাসহ মানুষের বাড়িঘর ও ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মানুষের মাঝে বিরাজ করে আতঙ্ক, ক্ষুধা ও ধনসম্পদ হারানোর গ্লানি। এ ধরনের বিপদে ধৈর্য ধারণ করাই মুমিনের সবচেয়ে বড় করণীয়।
এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই আমি (আল্লাহ) তোমাদের ভয়, ক্ষুধা এবং ধনসম্পদ ও ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দিয়ে পরীক্ষা করব। (হে রাসুল,) আপনি ধৈর্যশীলদের শুভ সংবাদ প্রদান করুন। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৫৫) এই বিভীষিকাময় পরিস্থিতির মাধ্যমে মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে পরীক্ষা করছেন। যারা বন্যায় আক্রান্ত তাদের পরীক্ষা করছেন ক্ষুধা, ভয়, সম্পদহানির মাধ্যমে; আর আমাদের পরীক্ষা করছেন বন্যাকবলিতদের বিপদে আমরা কী পদক্ষেপ নিচ্ছি তা দিয়ে।
তাদের এই বিপদের দিনে আমরা যদি তাদের পাশে দাঁড়াই, তাহলে মহান আল্লাহও আমাদের পাশে দাঁড়াবেন। আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রা.) সূত্রে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, দয়াশীলদের ওপর করুণাময় আল্লাহ দয়া করেন। তোমরা দুনিয়াবাসীকে দয়া করো, তাহলে যিনি আসমানে আছেন তিনি তোমাদের দয়া করবেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৪১)
তা ছাড়া মহান আল্লাহ সমগ্র মুমিন জাতিকে এক দেহের মতো বানিয়েছেন। ফলে দেহের কোনো অংশ আক্রান্ত হওয়া মানে গোটা দেহ আক্রান্ত হওয়া। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনদের উদাহরণ তাদের পারস্পরিক ভালোবাসা, দয়ার্দ্রতা ও সহানুভূতির দিক থেকে একটি মানবদেহের মতো, যখন তার একটি অঙ্গ আক্রান্ত হয় তখন তার পুরো দেহ ডেকে আনে তাপ ও অনিদ্রা। (মুসলিম, হাদিস : ৬৪৮০)
তাই আমরা আমাদের বন্যাকবলিত ভাই-বোনদের বিপদের মধ্যে রেখে স্বস্তিতে থাকতে পারি না। আমাদের প্রত্যেকেরই দায়িত্ব দুর্যোগে আক্রান্তদের সাহায্যে এগিয়ে আসা। যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করা। তাদের জন্য প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী, খাদ্য, বস্ত্র, ওষুধ, খাবার স্যালাইন ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে তারা যেন পরিবার নিয়ে পর্দা রক্ষা করে নিরাপদে থাকতে পারে, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এখনই তো সময় আখিরাতের জন্য বিনিয়োগ করার। মানুষের বিপদে এগিয়ে এসে তার জন্য খরচ করাকে মহান আল্লাহ বিনিয়োগ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, যা তিনি বহুগুণ ফেরত দেওয়ার ওয়াদা করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর সালাত কায়েম করো, জাকাত দাও এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ দাও। আর তোমরা নিজেদের জন্য মঙ্গলজনক যা কিছু আগে (পরকালের জন্য) পাঠাবে তোমরা তা আল্লাহর কাছে পাবে প্রতিদান হিসেবে উত্কৃষ্টতর ও মহোত্তমরূপে। আর তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৪৫)