নিউজ ডেস্ক: অক্টোবর মাসেই দেশে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন অন্তত ১৪ জন সাংবাদিক। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় এসব হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৫টি ঘটনায় সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা জড়িত বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন।
এ দিকে একই মাসে ৬ সংবাদকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তার মধ্যে ২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। এছাড়া গ্রেফতার হয়েছেন দুই সাংবাদিক।
অন্যদিকে জীবননাশের হুমকি ও নাজেহালের মুখে পড়েছেন আরো অন্তত ৫ জন সাংবাদিক। এর আগে সেপ্টেম্বরে দেশে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছিলেন ২০ জন সাংবাদিক। ওই মাসে ৬ সংবাদকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়। আগস্ট মাসে দেশে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছিলেন ৬ সাংবাদিক। ওই মাসে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট ২৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। হেনস্থা ও হুমকির সম্মুখীন হন আরো ৪ জন সংবাদকর্মী। জুলাই মাসে দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার হয়েছিলেন ৬ জন সাংবাদিক। ডিজিটাল আইনে ১০ জনসহ বিভিন্ন মামলায় জুলাই মাসে আসামি হয়েছিলেন ১১ জন সাংবাদিক। ওই মাসে হামলা, হেনস্থা ও হুমকির সম্মুখীন হন আরো ৭ জন সংবাদকর্মী।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মনিটরিং সেল প্রধান প্রধান সংবাদপত্রসহ শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমের ওপর নজর রেখে এসব তথ্য সংগ্রহ করে। বিএফইউজে’র সভাপতি এম আবদুল্লাহর তত্ত্বাবধানে এ মনিটরিং সেল কাজ করছে।
মনিটরিং কমিটিতে রয়েছেন বিএফইউজে’র সহ-সভাপতি রাশিদুল ইসলাম (আহ্বায়ক), সহকারী মহাসচিব মো: সহিদ উল্লাহ মিয়াজী (যুগ্ম আহ্বায়ক) ও প্রচার সম্পাদক মাহমুদ হাসান (সদস্য সচিব)।
বিচারহীনতার কারণে সাংবাদিক নির্যাতন অব্যাহত চলছে বলে উল্লেখ করে বিএফইউজে’র সভাপতি এম আবদুল্লাহ ও মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন এক বিবৃতিতে ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
অক্টোবর মাসে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনাগুলো ঘটেছে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, নোয়াখালী, বরিশাল, পটুয়াখালী, নওগাঁ ও বগুড়ায়।
হামলায় আহত ও লাঞ্ছিত সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন, বরিশালে দৈনিক দক্ষিণের সময়ের সম্পাদক আলম রায়হান, পত্রিকাটির প্রতিনিধি হাফিজ ও মশিউর, পটুয়াখালীতে যুগান্তরের দশমিনা প্রতিনিধি মো: মামুন তানভীর, নোয়াখালীতে ঢাকা প্রতিদিনের কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি নাসির উদ্দিন, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় আনন্দ টিভির নারী সাংবাদিক মনি ইসলাম, ঢাকার মিরপুর পল্লবীতে সাপ্তাহিক নতুন বার্তার সম্পাদক ইউসূফ আহমেদ, দৈনিক বাংলাদেশের আলোর সিনিয়র রিপোর্টার এসএম জহির, বাংলানিউজ২৪ ডটকমের স্টাফ করসপন্ডেট মিরাজ মাহবুব ইফতি, অনলাইন পোর্টাল জাগো কণ্ঠের ক্যামেরা পার্সন মোহাম্মদ আলী, যুগান্তরের গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া প্রতিনিধি খোরশেদ আলম খান, নওগাঁয় বৈশাখী টেলিভিশনের প্রতিনিধি এবাদুল হক ও বণিক বার্তার প্রতিনিধি আরমান হোসেন রুমন এবং বগুড়ায় প্রত্যাশা প্রতিদিনের শাহজাহানপুর প্রতিনিধি শাহীন।
এদিকে অক্টোবর মাসে ডিজিটাল আইনে গ্রেফতার হওয়া সাংবাদিক জাকির হোসেন ইমনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তারই সহকর্মী এক নারী সাংবাদিক। ফেসবুকে ওই নারী সাংবাদিকের চরিত্র হনন করে স্ট্যাটাস দেয়ার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।