নিউজ ডেস্ক: আগামী ৮ মে অনুষ্ঠিত কুলাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের জন্য লড়ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ তিন নেতা। তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেনু, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আ স ম কামরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি কামাল হাসান। তাদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম রেনু (আনারস), কামরুল ইসলাম (কাপ-পিরিচ) ও সহ-সভাপতি কামাল হাসান (মোটরসাইকেল) প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।
আওয়ামীলীগের তিন প্রার্থী থাকলেও জনপ্রিয়তায় বেশ এগিয়ে রয়েছেন কামরুল। এছাড়া উপজেলা আল ইসলাহ’র সাধারণ সম্পাদক বর্তমান (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান ফজলুল হক খান সাহেদ প্রার্থী হয়েছেন দোয়াত-কলম প্রতীকে। প্রতীক পেয়ে চলছে প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা। গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। দিনরাত তারা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট কামনা করছেন। আর ভোটাররাও তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভালো-মন্দসহ এলাকার নানা দাবি নিয়ে আলোচনা করছেন। এবার উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতায় নামলেও কাপ পিরিচ ও দোয়াত কলম প্রতীকের মধ্যেই মূল লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ভোটাররা মনে করছেন।
এদিকে আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সম্পাদক প্রার্থী হওয়ায় দলীয় নেতাকর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়েছেন। কর্মীদের টানতে প্রার্থীরা নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছেন। দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেনুর পক্ষে ভোটের মাঠে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন , কুলাউড়া পৌর মেয়র সিপার উদ্দিন আহমদ, জেলা পরিষদ সদস্য বদরুল আলম সিদ্দিকী নানু, ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বক্স, আকবর আলী সোহাগ, আব্দুর রব মাহাবুবসহ দলের আংশিক নেতৃবৃন্দ।
অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলামের পক্ষে ভোটের মাঠে প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে তাঁর বড়ভাই ও প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-২ আবু জাফর রাজু, আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ডা: রুকন উদ্দিন ,শফিউল আলম শফি ,অরবিন্দু ঘোষ বিন্দু, মনিরুল ইসলাম চৌধুরী, মনসুর আহমদ চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোরা দে,
সাংগঠনিক সম্পাদক বদরুল ইসলাম বদর, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ, সহ দপ্তর সম্পাদক আব্দুল হাই শামীম ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক মমদুদ হোসেন, সৈয়দ একেএম নজরুল ইসলাম, মুহিবুল ইসলাম আজাদ, মোছাদ্দিক আহমদ নোমান, কুলাউড়া উপজেলার হিঃ বৌদ্ধঃ খ্রীঃ এর সভাপতি ড.রজত কান্তি ভট্টাচার্য,পূজা পরিষদ কুলাউড়া উপজেলা আহব্বায়ক ডাঃঅরুনাভ দে, সদস্য সচিব অজয় দাস, সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুল হক ফজলু কুলাউড়া ইউসিসিএ লি:, ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মতলিব, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মো: এনামুল হক মিফতা, যুব লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক রহুল আমীন, এস এম জাকির হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আশফাক তানবীর সহ উপজেলা আল ইসলাহ’র দলের অধিকাংশ নেতৃবৃন্দ। চা-বাগান অধ্যুষিত কুলাউড়া উপজেলায় ভোটারদের কেন্দ্রে টানতে প্রার্থীরা নানা কৌশল অবলম্বন করছেন। চা-শ্রমিকদের প্রায় ৪০ হাজারের অধিক ভোট প্রার্থীর জয়-পরাজয়ে ব্যবধান করে দিতে পারে।
গত তিনদিন সরেজমিনে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কুলাউড়া পৌরশহর, কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের জনতাবাজার, গাজীপুর চা-বাগান, ভূকশিমইল ইউনিয়নের নবাবগঞ্জ ও রসুলগঞ্জ বাজার, ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়ন, বরমচাল ইউনিয়নের ফুলেরতল বাজার, ভাটেরা ইউনিয়নের স্টেশন বাজার, পৃথিমপাশা ইউনিয়নের রবিরবাজার, টিলাগাঁও ইউনিয়ন, হাজীপুর ইউনিয়নের কটারকোনা, পাইকপাড়া, শরীফপুর ইউনিয়নের নছিরগঞ্জ বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন সড়কে প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীদের পোস্টার ঝুলছে। কোথাও স্থাপন করা হয়েছে নির্বাচনী কার্যালয়। প্রার্থীরা তাদের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে এলাকায় এলাকায় গিয়ে উঠোন বৈঠক ও পথসভা করে উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন আর ভোট কামনা করছেন। কোনো কোনো প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা বাজারের দোকানে-দোকানে প্রচারপত্র বিলি করছেন। কোথাও চায়ের দোকানে বসে স্থানীয় লোকজন প্রার্থীদের নিয়ে নানা আলোচনা করছেন।
ভোটারদের মতে, চেয়ারম্যান পদে ৪ প্রার্থীকে নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ। তবে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম ব্যক্তিগতভাবে খুবই জনপ্রিয়। কারণ তাঁর পিতা সাবেক এমপি মরহুম আব্দুল জব্বার দীর্ঘদিন মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। এছাড়া তাঁর বড়ভাই মোঃ আবু জাফর রাজু প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-২ এর মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু প্রস্তাব প্রেরণ করেছেন। বিশেষ করে ক্যান্সার, লিভার, কিডনী, স্ট্রোক প্যারালাইজড, দরিদ্র, নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী, বিশেষ শিশু, মুক্তিযোদ্ধা, মুমুর্ষ প্রায় ১২০০ রোগীদেরকে প্রায় ৬ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। তাছাড়া গত ৫ বছরে চা শ্রমিকদের মাঝে সর্বমোট ৯ কোটি ৯৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন। এসব উন্নয়নে ইতিমধ্যে এলাকায়ও তিনি একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি হয়ে উঠেছেন।
বিগত তিন-চার বছরে কুলাউড়া উপজেলায় তিনি যেসব উন্নয়ন করেছেন তা হলো:
স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৯৩ টি, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫৭ টি, ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৭টি রাস্তার অনুমোদন করেছেন, যার কাজ চলমান রয়েছে। নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার প্রকল্পে ২৩.৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলায় ১ হাজারেরও বেশি গভীর নলকূপ এবং কমিউনিটি নলকূপ স্থাপন বাস্তবায়ানাধিন রয়েছে। কুলাউড়া উপজেলায় গ্রীণ হাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমানোর লক্ষে সৌর বিদ্যুতায়িত। সড়কবাতি স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষে ৪ কোটি টাকার বারদ্ধ প্রদানের প্রস্তাব প্রেরণ। এছাড়া মসজিদ, মন্দির, শ্বশান ঘাট, কবরস্থান এবং ঈদগাহসহ প্রায় ২০০টি প্রতিষ্ঠানে আর্থিক অনুদান দিয়েছেন। ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ফানাই নদীর উপর ব্রীজ নির্মানাধীন রয়েছে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ কুলাউড়া শহর অংশে যানজট নিরসনে প্রশস্থ চারলেনে সড়ক উন্নীতকরণের জন্য ৪১ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ। দূর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে ১৭টি কাঁচা রাস্তা পাকাকরণ ও ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ২টি ব্রীজ নির্মাণ। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগে ২০২০-২১ অর্থ বছরে ৫টি প্রতিষ্ঠানে ভবন নির্মানের জন্য ১ কোটি টাকা করে ৫ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৪টি প্রতিষ্ঠানে দেড় কোটি ও ২ কোটি টাকা করে ৬ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। মেরামত ও সংস্কার জন্য (২০২২-২৩ অর্থ বছর) ৯টি প্রতিষ্ঠানে ২০ লক্ষ টাকা করে ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা। ভবন মেরামত (২০২১-২২ অর্থ বছর) ৫টি প্রতিষ্ঠানে ১৫ লক্ষ টাকা করে ৭৫ লক্ষ টাকা। আসবাবপত্র প্রস্তুত ও সরবরাহ ৩ কোটি ২৯ লক্ষ ১৯ হাজার টাকা। কারিগরী ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে মেরামত ও সংস্কার ২২-২৩ অর্থ বছরে ৫ টি প্রতিষ্ঠানে ২০ লক্ষ টাকা করে ১ কোটি টাকা। ভবন নির্মাণ ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ৩টি ভবন নির্মাণ সাড়ে ৪ কোটি টাকা। শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ ২২-২৩ অর্থ বছরে ২টি ভবন নির্মাণ ৩ কোটি টাকা এবং কুলাউড়া কারিগরী স্কুল এন্ড কলেজ অনুমোদন করা হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ১৬টি বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণ ২৪ কোটি টাকা। ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে ২৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভবণ/অতিরক্ত শ্রেণী কক্ষ নির্মাণ ৩৮ কোটি টাকা, ৮১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র মেরামত ২ লক্ষ টাকা করে ১.৬২ কোটি টাকা, ৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বৃহৎ মেরামত ৬-৭ লক্ষ টাকা করে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা, ৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে মেরামত ৬ লক্ষ টাকা, ১২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভবণ/অতিরক্ত শ্রেণী কক্ষ নির্মাণ, ১৫ কোটি টাকা, ৪০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র মেরামত ২ লক্ষ টাকা ৮০ লক্ষ টাকা, ৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বৃহৎ মেরামত ৬-৭ লক্ষ টাকা ৪৫ লক্ষ টাকা, ৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ১৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বৃহৎ মেরামত ৬-৭ লক্ষ টাকা করে প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা, ১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা, ১১২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষুদ্র মেরামত ২ লক্ষ টাকা করে ২ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এছাড়াও বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, শাখা খোলা, আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করা ও এমপিওভুক্তি করা হয়েছে।
২০১৯-২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল, অসহায়, দরিদ্র, নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী, বিশেষ শিশু, মুক্তিযোদ্ধা, মুমুর্ষ ১০০ রোগীদের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রায় ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়। ২০১৯-২০২৩ সাল পর্যন্ত সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে ক্যান্সার, লিভার, কিডনী, স্ট্রোক প্যারালাইজড, নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী, বিশেষ শিশুসহ ৭৬৩ রোগীকে প্রায় ৩ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং আরো ২৬৫ টি আবেদন বিবেচনাধীন রয়েছে।
গত ৫ বছরে চা শ্রমিকদের মাঝে সর্বমোট ৯ কোটি ৯৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। সমাজকল্যাণ পরিষদ ৩৩২ জন ৫ হাজার টাকা করে মোট ১৬ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে, এবং ২০২৩ সালে আরো ১৬৩ জনের আবেদন বিবেচনাধীন রয়েছে। এছাড়াও করোনা মহামারির সময় এলাকার অসহায় দরিদ্র মানুষের মাঝে খাদ্য বিতরণ, প্রতি বছর শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন এবং এলাকার গরীব ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার জন্য আর্থিক অনুদান প্রদান করেন। নিউরোসাইন্স ফাউন্ডেশন বুদ্ধি প্রতিবন্ধি, অটিজম, সেরিব্রাল পালসি রোগী ৩৪৫ জন ১০ হাজার টাকা করে মোট ৩৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে। আরো ১১৭টি আবেদন বিবেচনাধীন রয়েছে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কুলাউড়া উপজেলায় ‘শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণে’র প্রস্তাব প্রেরণসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ৭৫টি ক্লাব ও সামাজিক সংগঠনে মাধ্যমে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ করা হয়। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ তলা বিশিষ্ট ভাবন নির্মাণের প্রস্তাব ও ২৫০ শয্যায় উন্নীতকরণের প্রস্তাব ও কাজ প্রক্রিয়াধীন। মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ বিভাগ থেকে কুলাউড়ায় মৎস্য গবেষণা ইনষ্টিটিউট স্থাপনের প্রস্তাব ও কাজ প্রক্রিয়াধীন। হিন্দু ধর্ম কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা বৃত্তি প্রদানের জন্য ২৬৮ জনের নাম প্রস্তাব। মন্দির, মঠ, আশ্রম, আখড়া, শ্মশানসহ ২১টি প্রতিষ্ঠানের সংস্কারের ও পুনঃনির্মানের জন্য এবং আর্থিক অনুদানের জন্য প্রস্তাব প্রেরণ। এছাড়া উপজেলার সনাতন ধর্মালম্বী অসচ্ছল ৭৭ ব্যাক্তিকে আর্থিক অনুদানের জন্য নাম প্রস্তাব ও কাজ প্রক্রিয়াধীন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে ১৬টি মসজিদ পাঠাগার স্থাপনের জন্য বই ও আলমিরা প্রদান।
আইসিটি বিভাগ থেকে উপজেলায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনউিবেশন সেন্টার নির্মাণে প্রস্তাব প্রেররণ, ২১টি স্কুলে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন, আরও ২৮টি ল্যাব স্থাপনের জন্য প্রস্তাব প্রেরণ ও কাজ প্রক্রিয়াধীন।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে উপজেলায় টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নির্মারে প্রস্তাব প্রেরণ। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে উপজেলায় টেকনিক্যাল সেন্টার স্থাপনের প্রস্তাব ও কাজ প্রক্রিয়াধীন। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে ঢুলিপাড়া থেকে ফানাই নদী পর্যন্ত খাল খনন বাস্তবায়নাধীন, মরা গুগালিছড়া খাল খননসহ আরও ৬টি নদী ও খাল খননের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে মা ও শিশু হাসপাতাল নির্মাণের প্রস্তাব প্রেরণ, দরিদ্র মহিলাদের ৫০টি সেলাই মেশিন বিতরণ, ১৮৮ জন নারীকে ১০ হাজার টাকা করে মোট ১৮ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়। এছাড়াও আরও ১৫০ সেলাই মেশিন বিতরণ ও ২৬৪ জনকে আর্থিক অনুদান প্রদানের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ডায়াবেটিক হাসপাতাল স্থাপনের জন্য প্রস্তাব প্রেরণ, বিশেষ শিশুদের জন্য স্কুল নির্মাণের প্রস্তাব ও প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া কুলাউড়া উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপনে সহযোগিতা করেন। এজন্য অনেকে মনে করছেন, কামরুল ইসলাম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে কুলাউড়ায় বেশি উন্নয়ন হবে।
ফজলুল হক খান সাহেদ বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর সততা ও নিষ্ঠার সাথে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছি। দল, মত নির্বিশেষে ভোটাররা আমাকে নির্বাচিত করবেন বলে আমি আশাবাদী।
কামরুল ইসলাম বলেন, জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। উপজেলা পরিষদে পাঁচ বছর ভাইস চেয়ারম্যান ও পাঁচ বছর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছি। এবারকার নির্বাচনে সাধারণ জনগণের অনেক সাড়া পাচ্ছি। আমার পিতা একুশে পদকপ্রাপ্ত সাবেক এমপি, মরহুম আব্দুল জব্বার দীর্ঘদিন মানুষের সেবা করে গেছেন। বাবার আদর্শকে বুকে লালন করে মানুষের ভালোবাসা নিয়ে এবার উপজেলা নির্বাচন করছি। পাশাপাশি নির্বাচিত হলে বিগত সময়ের ন্যায় কুলাউড়া উপজেলার উন্নয়নে তিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
রফিকুল ইসলাম রেনু বলেন, তিন বার ভূকশিমইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলাম। দীর্ঘদিন আওয়ামীলীগের রাজনীতি করছি । আমি আশা রাখছি শেষ বয়সে কুলাউড়ার মানুষ আমাকে মূল্যায়ন করবে।
নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেহা ফেরদৌস চৌধুরী পপি (হাঁস) ও সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নেহার বেগম (ফুটবল) প্রতীক পেয়েছেন। এছাড়াও পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ প্রার্থীর মধ্যে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ময়নুল ইসলাম সবুজ (টিউবওয়েল), চা শ্রমিক নেতা রাজকুমার কালোয়ার রাজু (চশমা), সাইফুল ইসলাম কুতুব (তালা), তালামীয নেতা আফজাল হোসেন সাজু (বই) ও আদিবাসী সন্তান পূরণ উরাং (টিয়া পাখি) প্রতীক প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
উল্লেখ্য, কুলাউড়া আসনে ১৩টি ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভায় মোট ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ৯০ হাজার ৬৪৮ জন। মোট ভোট কেন্দ্র ১০৩।