নিউজ ডেস্ক: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে এক কিশোরীকে ধর্ষণ ও অবৈধ গর্ভপাত ঘটিয়ে হত্যার অভিযোগ এনে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের পিতা বাদি হয়ে ময়মনসিংহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ মামলা দায়ের করেছেন।
বুধবার (২৬ মে) দুপুরে এ মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ জেলা ও জজ আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন। তিনি বলেন, ২৪ মে আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়। ২৫ মে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি নথিভুক্ত করার জন্য ঈশ্বরগঞ্জ থানা-পুলিশকে নির্দেশ দেন।
মামলার আসামিরা হলেন, উপজেলার ৯নং উচাখিলা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম শফিক (৪৮), তার বড় ভাই উচাখিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মঞ্জুরুল হক মঞ্জু (৫২), নিহতের মা আছমা খাতুন (৪০), দুলাল মিয়া (৪০) ও মাহাবুবুল আলম (৪০)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, চরআলগী গ্রামের কাঠমিস্ত্রি স্বপন মিয়া তার পরিবার পরিজন নিয়ে উচাখিলা বাজারে বসবাস করে আসছিল। তার বাসায় ইউপি চেয়ারম্যান শফিক যাতায়াত করতো। তাকে বাসায় না আসার জন্যে নিষেধ করায় চেয়ারম্যানের পরামর্শে স্বপনকে তালাক দিয়ে আসমা ও তিন কন্যা সন্তান নিয়ে বাজারের সীডস্টোর ভবনে বসবাস শুরু করে। সীডস্টোরের বাসায় চেয়ারম্যান নিয়মিত যাতায়াত অব্যাহত রাখে। এ সুযোগে আসমার দ্বিতীয় কন্যা ১৬ বছর বয়সী কিশোরীকে বিবাহ করার মিথ্যা প্রলোভনে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলে। এক পর্যায়ে কিশোরী অন্তঃসত্তা হয়ে পড়ে। এতে আসামিরা বিপাকে পড়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ওই কিশোরীকে কবিরাজী ঔষধ সেবন করায়। এতে ভুক্তভোগীর ব্যাপক রক্তক্ষরণ শুরু হলে গত ৯ মে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ডাক্তার তাকে ঢাকায় রেফার করে। কিন্তু আসামিরা ভুক্তভোগীকে ঢাকায় না নিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে। পরদিন তার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে ১১ মে কিশোরীকে ঢাকায় ন্যাশনাল নিউরো সাইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ মে রাত ২ টার দিকে মারা যায়।
লাশ ঢাকা থেকে এনে এলাকায় দাফন কাফন না করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই ভিকটিমের বাড়ি থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে উপজেলার ইসলামপুর জামিয়া গাফুরিয়া মাদরাসা কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জানান, মেয়েটি ব্রেইন স্ট্রোকে মারা গেছে। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।