নিউজ ডেস্ক: ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির আবিষ্কৃত করোনাভাইরাস প্রতিরোধী সম্ভাব্য টিকা প্রাথমিক ধাপের ট্রায়ালে ‘সফল’ হয়েছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসাশাস্ত্র-বিষয়ক বিখ্যাত সাময়িকী দ্য ল্যানসেট। এ টিকা পরীক্ষামূলকভাবে যাদের শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছিল তাদের সবার মধ্যেই অ্যান্টিবডি সৃষ্টি হয়েছে।
১ হাজার ৭৭ জনের ওপর পরীক্ষামূলকভাবে এ টিকা প্রয়োগ করা হয়, যাদের সবার শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি শ্বেত রক্তকণিকা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সক্ষমতা দেখিয়েছে।
সোমবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যার দিকে ল্যানসেটে টিকার প্রাথমিক ট্রায়ালের এই ডেটা প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়েছে, এই ফলাফল আশা জাগালেও তৃতীয় ধাপের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এই ধাপে একসঙ্গে অনেক মানুষকে টিকা দেয়া হচ্ছে।
ল্যানসেট জানিয়েছে, অক্সফোর্ডের টিকায় ‘টি-সেলের’ জন্য যেমন প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে, তেমনি ভাইরাস প্রতিরোধী কার্যকর অ্যান্টিবডিও তৈরি করছে।
একজন মানুষ যখন কোনো ভাইরাসে সংক্রমিত হন, তখন শরীর ওই ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করতে রক্তে যে উপাদান তৈরি করে তাকে অ্যান্টিবডি বলা হয়। কভিড-১৯’র ক্ষেত্রে অনেকের শরীরে আপনা-আপনি অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে। অনেকের আবার হচ্ছে না, এদের জন্যই মূলত টিকা দরকার।
একইভাবে আমাদের ‘অভিযোজিত’ রোগপ্রতিরোধক ব্যবস্থার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ‘টি-সেল’।
অ্যান্টিবডি তৈরি হয় বি-সেল দ্বারা। টি-সেল কিছুটা অন্য রকম। এরা অ্যান্টিবডি তৈরিতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে ভাইরাসে সংক্রমিত মানবকোষকে ‘আক্রমণ’ করে। হাম এবং সাধারণ ঠাণ্ডাজনিত রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে এই সেলগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
একজন মানুষ যখন সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠেন, তখন তার শরীরে সে সেল থেকে যায়, তাকে চিকিৎসকেরা ‘মেমোরি’ সেল বলেন। ভাইরাস আবার আমাদের আক্রমণ করলে এরা প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুত থাকে।
টিকাটির ট্রায়ালে অবশ্য কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কারো কারো জ্বর এবং মাথাব্যথার মতো সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল। তবে সেসব গুরুতর কিছু নয়। গবেষকেরা বলছেন, প্যারাসিটামলেই এগুলো মোকাবিলা করা যাবে।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রফেসর সারা গিলবার্ট টিকার প্রাথমিক ফলাফলে খুশি হলেও সতর্ক থাকার কথা জানিয়েছেন, ‘আমাদের টিকায় মহামারী সামলানো যাবে কি না, সেটি নিশ্চিত হতে হলে আরও অনেক কাজ করতে হবে।’