নিউজ ডেস্ক: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক রোগীর সেবা দিতে গিয়ে রংপুরের পীরগাছায় এক নার্স নিজেই আক্রান্ত হয়েছেন। আজ বুধবার নার্সের করোনা আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. সানোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ওই নার্স তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বুধবার রাতেই তাকে রংপুরে কভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, করোনায় আক্রান্ত নার্সের বয়স ৩০। তিনি নার্স হিসেবে কর্মরত পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তার বাড়ি গঙ্গাচড়া উপজেলায়। করোনা পজিটিভ হওয়ার খবর পাওয়ার আগের রাতেও ওই নার্স স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাত্রিকালীন দায়িত্ব পালন করেন। তার আক্রান্তের খবরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকসহ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরর মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নিরাপত্তা সরঞ্জাম ছাড়াই তার সঙ্গে অনেকে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৩ মে এক যুবক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর পরিবারের লোকজন জানায় তার জ্বর ছিল। এতে করোনা সন্দেহে তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলশনে রাখা হয়। পরদিন তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সে রাতেই যুবক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পালিয়ে যান।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর চিকিৎসকসহ নার্স ওই রোগীর সেবা দেন। পরে ৫ মে যুবকের নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ আসে। এর মধ্যে ওই নার্স যুবকের সংস্পর্শে আসার পরেও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখেন। এ বাস্তবতায় নিজেই অসুস্থবোধ করতে থাকেন তিনি। তার গায়ে জ্বর ছিল না। তবে কিছুদিন থেকে হালকা গলাব্যথা ছিল। শরীরটা অস্বাভাবিক লাগছিল। তারপরও তিনি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছিলেন। গত ৭ মে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অন্যান্যদের সঙ্গে তার নিজের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। পাঁচ দিন পর বুধবার বিকেলে রেজাল্ট আসে তার করোনা পজিটিভ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. নাহিদ জামান বলেন, ওই নার্সের সঙ্গে চিকিৎসকসহ অনেকে প্রটেকশন ছাড়াই দায়িত্ব পালন করেছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু আল হাজ্জাজ বলেন, ব্যাংক এশিয়ার এক ক্যাশিয়ারের চিকিৎসা দিতে গিয়ে নার্স করোনা আক্রান্ত হন।