1. ph.jayed@gmail.com : akothadesk42 :
  2. admin@amaderkatha24.com : kamader42 :
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৭ অপরাহ্ন

উপসর্গ থাকলেও পজিটিভ হওয়ার ভয়ে কেউ পরীক্ষা করাচ্ছে না

আমাদের কথা ডেস্ক
  • আপডেট : সোমবার, ৫ জুলাই, ২০২১

নিউজ ডেস্ক: গাইবান্ধায় করোনা পরিস্থিতি দিন দিন প্রকোপ আকার ধারণ করছে। জেলায় আশঙ্কাজনক হারে জ্বর, সর্দি ও কাশির প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনার এসব উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিনই একাধিক ব্যক্তির মৃত্যু হচ্ছে। পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ হলে বাড়ি লকডাউনের ভয়ে বেশির ভাগ মানুষই নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছেন না। আবার অনেকেই জানেন না কোথায় কিভাবে এই করোনার পরীক্ষা করাতে হয়।

এদিকে যারা পরীক্ষা করাচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগ ব্যক্তির করোনা পজিটিভ শনাক্ত হচ্ছে। তবে এই জ্বর-সর্দি-কাশি থেকে নিরাময় পেতে অধিকাংশ রোগীই জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে গড়ে ওঠা ফার্মেসি ও পল্লী চিকিৎসকের নিকট থেকে ওষুধ এনে খাচ্ছেন। এ কারণে জেলায় করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লম ঝাড় ইউনিয়নের তালুক মন্দুয়ার গ্রামের দিনমজুর সৈয়দ আলী (৪০) গত ৩ দিন থেকে সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি জানান, শুধু তিনি নন। তার বাড়িতে তার স্ত্রীও আক্রান্ত। তিনি ও তার স্ত্রী গ্রামের পল্লি চিকিৎসকের নিকট থেকে ওষুধ কিনে এনে খেয়েছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, করোনা কোথায় পরীক্ষা করাতে হয়। তা তার জানা নাই।

উপসর্গ থাকলেও করোনা পজিটিভ হওয়ার ভয়ে কেউ পরীক্ষা করাচ্ছেন না

সাদুল্লাপুর উপজেলার কামারপাড়া ইউনিয়নের খামার বাগচি গ্রামের সুরবান বেগম (৫৮) গত এক সপ্তাহ ধরে সর্দি-জ্বরে ভুগছেন। তিনি জানান, স্থানীয় ওষুধের দোকান থেকে জ্বরের ওষুধ কিনে খাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, ওষুধ খাইলে (খাওয়া হলে) গাঁও ঘামি যায়্যা (গিয়ে) জ্বর কমি (কমে) যায়। পরে আবার জ্বর আসে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনটে পরীক্ষা করা হয়। তাক তো হামরা জানি না।

একই গ্রামের নুরজাহান বেগম (৬০), মোছা: লতিফা খাতুন (৪০), মোছা: জলে বেগম (৬২) ও আসমা বেগম (৪৫) সহ প্রায় প্রতি বাড়িতে রয়েছে সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত রোগী। গতকাল সোমবার পাশের পুরাণ লক্ষীপুর গ্রামের সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত আব্দুল বারী মিয়া (৬৫) নামে একজন মারাও যান বলে জানান

উপসর্গ থাকলেও করোনা পজিটিভ হওয়ার ভয়ে কেউ পরীক্ষা করাচ্ছেন না

এদিকে জেলা সদর ও উপজেলা সদর বাজারের সবকটি ওষুধের দোকানেই ভিড় চোখে পড়েছে। কথা বলে জানা গেছে, বেশির ভাগই এসেছেন জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টের ওষুধ নিতে।

সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শাহীনুল ইসলাম মন্ডল জানান, গত রবিবার হাসপাতালে বহির্বিভাগে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ১২০ রোগী চিকিৎসা সেবা নেন। তারমধ্যে ১২ জন সর্দি-জ্বরের রোগীর কোভিড টেস্ট করা হলে ৫ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। সোমবার বহির্বিভাগে চিকিৎসা সেবা নেন ১৩২ জন। এরমধ্যে ১২ জনের পরীক্ষা করা হয়। ৫ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়।

গাইবান্ধা সদর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ হারুন অর রশিদ বলেন, সাধারণত সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা গুরুতর অসুস্থ না হলে হাসপাতালে আসেন না। নিজের ইচ্ছে মতো প্যারাসিটামল বা অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খান। এটা মোটেও ঠিক না। কারণ এখন করোনা ভাইরাসও রয়েছে। সিজনাল সর্দি-জ্বর নাকি কারোনার জন্য জ্বর-সর্দি তা চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি ভালো বুঝবেন। তাই জ্বর হলে অবশ্যই একজন চিকিৎসক দেখিয়ে তাঁর পরামর্শ মোতাবেক ওষুধ খেতে হবে।

জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছুটা উদ্বিগ্ন হওয়ার কথা স্বীকার করেন গাইবান্ধার সিভিল সার্জন আ.ক.ম আখতারুজ্জামান বলেন, কোভিড-১৯ কে চিহ্নিত করতে রেপিএন্টিজেন টেস্ট কীটের মাধ্যমে দ্রুত পরীক্ষার জন্য প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। কিন্তু লোকজন উৎসাহিত হচ্ছে না। লোকজন যাতে উৎসাহিত হয় এজন্য স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠ কর্মীদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই জাতীয় আরো খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Maintained By Macrosys