আমাদেরকথা ডেস্ক: বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য আব্দুল জব্বারের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ । তিনি তাঁর বাণীতে বলেন,
স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহধন্য আব্দুল জব্বার ছিলেন বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁকে বঙ্গবন্ধু স্নেহ করতেন ও ভালবাসতেন। তিনি নিজেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠকর্মী হিসেবে পরিচয় দিতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। প্রচন্ড ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, সাহসী, তেজদীপ্ত একজন মানুষ ছিলেন আব্দুল জব্বার। ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ৬-দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭০-এর নির্বাচন, ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে অন্যন্য ভূমিকা রেখেছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে যেমন ছিলেন সাহসী, তেজদীপ্ত, ৭৫ পরবর্তী দুঃসময়েও তিনি সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন, প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করেছিলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ৭৫ পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ নানা টানাপোড়ন মধ্যে দিয়ে গেছে। দলের ভাঙ্গা গড়া, ষড়যন্ত্র দেখা গেছে। আব্দুল জব্বার সেই ভাঙ্গা গড়া দলকে সুসংগঠিত করেছেন কখনো আওয়ামী লীগ ছেড়ে যাননি, নেতৃত্বের প্রতি, দলের সঙ্গে বেইমানি, মোনাফেকি করেননি। ৭৫ পরবর্তী সময়ে
তিনি নির্মমভাবে অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি দমে যাননি। রাজনীতিতে সাহস, ত্যাগ ও দুর্যোগের সময় ঘুরে দাঁড়ানোর যে বৈশিষ্ট্য তা তাঁর কাজের মধ্যে বার বার পরিলক্ষিত হয়েছে।
স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি তাঁর যে অকৃত্রিম ভালবাসা, শ্রদ্ধা, আনুগত্য ও বিশ্বাস সেটা বাঙালির ভাষা আন্দোলন থেকে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন ও সংকটে বারবার প্রমাণিত হয়েছে, তাঁর রাজনৈতিক অতীত ছিল সমুজ্জ্বল। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশ পুনর্গঠনে আব্দুল জব্বারের ভুমিকা ছিল অপরিসীম। আজীবন নির্মল নিবেদিত প্রাণ বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী, নন্দিত জননেতা আব্দুল জব্বার একজন শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবী ও ক্রীড়া সংগঠক। তিনি নিজ এলাকায় অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসা স্থাপন ও পৃষ্টপোষকতা করেছেন এবং বিভিন্ন সামাজিক- সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সেবা মূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
আব্দুল জব্বার একাধারে যেমন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র লীগের সংগঠক ছিলেন তেমনি মাত্র ১৯ বছর বয়সে ১৯৬৪ সালে কুলাউড়া থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি একজন ব্যতিক্রম ধর্মী রাজনীতিবিদ ও এক বিরল ব্যক্তিত্বের অধিকারী।
মাটি ও অবহেলিত মানুষের সাথে ছিল তাঁর নিবিড় সম্পর্ক। তাঁর সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন ছিল বর্নাঢ্যময় ও অহংকার করার মতো। আব্দুল জব্বারের অসাধারন ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, সততা ও দূরদর্শিতা আগামী প্রজন্মের জন্য অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।