নিউজ ডেস্ক: তালিবানি ফতোয়ার তোয়াক্কা না করে স্কুলে যাওয়ায় পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাইকে গুলি করেছিল জঙ্গিরা।
তার লড়াকু মনোবলকে কুর্নিশ জানিয়ে ২০১৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার দিয়েছিল সুইডেনের নোবেল কমিটি। গুলি খাওয়া সেই কিশোরী সোমবার ২৪ বছরে পা দিয়েছেন।
আর সেই দিনই তাকে ‘ভারতঘেঁষা এবং পশ্চিমি সংস্কৃতির নির্মাণ’ বলে সমালেচনা করে মালালার বিরুদ্ধে মাঠে নামল পাকিস্তানের বেসরকারি স্কুলের সর্বোচ্চ সংগঠন।
পাকিস্তানের বেসরকারি স্কুল সংগঠনের প্রেসিডেন্ট কাশিফ মির্জা সোমবার লাহোর গুলবার্গে একটি তথ্যচিত্রের উদ্বোধন করেন।
মালালার আত্মকথন ‘আই অ্যাম মালালা’ বইটিকে চ্যালেঞ্জ করে বানানো ওই তথ্যচিত্রের নাম ‘আই অ্যাম নট মালালা।’
মির্জা বলেন, দেশের দুই লাখ বেসরকারি স্কুলের দুই কোটি শিক্ষার্থীর কাছে মালালার আসল রূপ তুলে ধরতে চাই।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা বলেন, বিয়ের মতো পবিত্র সামাজিক প্রতিষ্ঠানের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মালালা। তার বদলে নারী-পুরুষের একসঙ্গে থাকা বা ‘পার্টনারশিপ’-এর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি। ইসলামি মতে যা আসলে অবৈধ।
তিনি আরও বলেন, কোরআনের নানা বিধান, ধর্মীয় আদর্শ এবং পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ আলি জিন্নাহসহ পাক সেনাবাহিনীর সমালোচনা করেছেন মালালা। ওই বইয়ে পশ্চিমি জীবনধারা ও আদর্শের প্রচার করেছেন।
মির্জার মতে, ভারতে আশ্রয় নেওয়া বিতর্কিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিনের সঙ্গে মালালাকে এক ছবিতে দেখা গেছে। মালালা আসলে পশ্চিমি দেশগুলোর নির্মাণ এবং ভারতের ঘনিষ্ঠ। কাজেই স্কুল পড়ুয়ারা যাতে মালালার গল্পে প্রভাবিত না হয়, সে কারণে তথ্যচিত্রটি তৈরি করা হয়েছে।
মালালাবিরোধী তথ্যচিত্র প্রকাশের পাশাপাশি পঞ্জাবপ্রদেশে মালালার ছবি দেওয়া বেশ কিছু পাঠ্যবই বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
অভিযোগ, পঞ্জাবের স্কুলশিক্ষা সংক্রান্ত বোর্ডের (পিসিবিটি) চূড়ান্ত ছাড়পত্র ছাড়াই বইটি ছাপা হয়েছে। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস কর্তৃক প্রকাশিত সপ্তম শ্রেণির ওই পাঠ্যবইয়ে পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের তালিকায় নাম ছিল মালালার।
১৯৬৫ সালে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে প্রয়াত সেনা কর্মকর্তা আজিজ ভাট্টি, পাকিস্তানের রূপকার মহম্মদ আলি জিন্নাহ, কবি আল্লামা ইকবাল, শিক্ষাবিদ স্যার সৈয়দ আহমেদ খান, প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খানের পাশাপাশি বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ নোবেলজয়ী হিসেবে পাঠ্যবইয়ে ছবি ছিল মালালারও।