নিউজ ডেস্ক: চার বছর ধরে ট্রাম্প প্রশাসনের নানা সিদ্ধান্ত ও হুমকিধমকিতে তটস্থ থাকা অনেক অভিবাসীর জন্য পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের জয় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ এনে দিয়েছে।
২০১৭ সালে দায়িত্ব নেয়ার পরই ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম কোপটি মারেন মার্কিন অভিবাসী ও অভিবাসন প্রত্যাশীদের ওপর। তারপর থেকে চারটি বছর পড়াশোনা, কর্মসংস্থান ও আশ্রয়ের উদ্দেশ্যে মানুষের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ কঠিন করে তোলেন তিনি। এমনকি আদালতও ট্রাম্প ও তার প্রশাসনকে অভিবাসনবিরোধী পদক্ষেপ থেকে বিরত রাখতে পারেনি। সিএনএন।
অভিবাসন ইস্যুতে বাইডেনের অবস্থান ট্রাম্পের একেবারে বিপরীত মেরুতে। ফলে অভিবাসী ও কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের সমর্থনও বেশি পেয়েছেন তিনি। ৩ নভেম্বরের পর টানা চারদিনের অচলাবস্থার পর বাইডেনের জয় নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাই অভিবাসীদের স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ আসে। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তারা।
এমনই এক অভিবাসী হলেন গেরালডাইন চিঙ্গা। ওবামা প্রশাসনের সময় শিশুকালে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছা নথিপত্রহীন অভিবাসীদের দেশ থেকে বরখাস্তের বিরুদ্ধে আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে থাকার সুযোগ পান। তার মতো আরও প্রায় এক কোটি ১০ লাখ অভিবাসী চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটিয়েছেন।
কিন্তু বাইডেনের জয়ের সঙ্গে তাদের দুঃশ্চিন্তা লাঘব হয়েছে। চিঙ্গা জানান, তিনি হাঁটার সময় বাইডেনের জয়ের সংবাদ পান এবং আনন্দে কেঁদে ফেলেন।
বাল্যকালে যুক্তরাষ্ট্রে আসা এবং বৈধ কাগজপত্র না থাকা এসব অভিবাসীকে ওবামা প্রশাসনের সময় বসবাসের যে সুযোগ দেন আদালত, তার নাম ডেফারড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাইভাল (ডিএসিএ)। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন ২০১৭ সালে এই প্রোগ্রামটি আটকে দেয়। বিপাকে পড়েন কোটি মার্কিন অভিবাসী।
চিঙ্গার মতোই আরেক ডিএসিএ পাওয়া অভিবাসী হলেন মোইসেস সেরানো। তিনি বলেন, ‘আজকে যখন আমি সংবাদটি দেখলাম, সেটি পড়ছিলাম এবং আমার বন্ধ মেসেজ করে আমাকে বাইডেনের জয়ের সংবাদ দিলেন; আমি যেন বহু চাপ থেকে নিস্তার পেলাম। গত চারদিন যে বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছিলাম, সেটি কাঁধ থেকে নেমে গেছে।’
কমলার জয়ে উৎসব ভারত ও জ্যামাইকায় কমলা আমাদের গ্রামের গর্ব : যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কমলা হ্যারিসের জয়ে উৎসব শুরু হয়েছে ভারতে। পিছিয়ে নেই জ্যামাইকাও। এই দুটি দেশই কমলার অতি আপন। প্রথমটা মায়ের দেশ। দ্বিতীয়টা বাবার।
কমলাকে ‘আপন কন্যা’ জ্ঞানে উৎসব উদযাপন করছেন ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের থুলাসেন্দ্রাপুরম গ্রামের অধিবাসীরা। রোববার সকালে খুশিমনেই ঘুম ভাঙে গ্রামবাসীর। কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরের দেশের গুরুত্বপূর্ণ পদের আসীন হয়েছে তাদেরই গ্রামের মেয়ে। গর্বে বুক ভরিয়ে দিয়েছে এই খবর তাদের।
তাই রাজ্যের থিরুভারুর জেলার থুলাসেন্দ্রাপুরম গ্রামের মেয়েরা বাড়ির সামনে আঁকতে বসেছেন আল্পনা রং ‘রঙ্গোলি’। গ্রামবাসীদের কণ্ঠে ভেসে আসছে ‘কমলা আমাদের মেয়ে, আমাদের গর্ব।’ এদিকে কমলার জয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ জ্যামাইকাতেও। রাজধানী কিংস্টন থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত সবার মুখেই তার নাম। শুভেচ্ছা জানাচ্ছে পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনও।