নিউজ ডেস্ক: নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কোনো প্রবাসী বাংলাদেশি মারা গেলে তার পরিবারকে তিন লাখ টাকা দেবে সরকার।
বিশ্বব্যাপী এই মহামারীর মধ্যে বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, “যে আসবে দেশে, তার হয়ত টাকা-পয়সা থাকবে না, তাদের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। আর কোভিডে আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে তাদের পরিবার তিন লাখ টাকা করে পাবে।”
এছাড়া দেশে ফিরে আসা প্রবাসীরা ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য পাঁচ থেকে ১০ লাখ টাকা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে ঋণ সুবিধা পাবেন বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
প্রায় এক কোটি বাংলাদেশি বিশ্বের নানা দেশে কাজ করে। তাদের পাঠানো অর্থ বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি।
করোনাভাইরাস সঙ্কটে বিশ্বের নানা দেশে কর্মরত অনেক বাংলাদেশিকে দেশে ফিরে আসতে হয়েছে, পুনরায় ফিরে যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন তারা।
অনেকে এখনও বিদেশে রয়েছেন, সঙ্কটের পড়ে যারা ফিরতে চাইলেও পারছেন না এই মুহূর্তে বিমান চলাচল বন্ধ থাকার কারণে।
আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের ফেরানোর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
তিনি বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এই সময়ে তাদের দেশ থেকে প্রবাসীদের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা যদি না আনি, তাদের হ্যাঁ না বলি, তাহলে তারা আমাদের থেকে আর লোক নেবে না।
“সেজন্য আমরা আনছি। কিন্তু খুব উৎসাহ দেখিয়ে আনছি না। আনছি, না আনলে অসুবিধা হবে সেজন্য। অল্প অল্প করে।”
সৌদি আরবে জেলবন্দি বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার কাজও চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, “জেলের লোকগুলো পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য ওরা অনেক দিন ধরে আলাপ করছিল। আমরা বলেছি, নেব। তবে দেখতে হবে কোন ধরনের অপরাধের জেলে।
“কেউ হয়তো ড্রাগের জন্য, কেউ ইকামার মেয়াদ শেষ হয়েছে বা অন্যান্য ছোটখাটো অপরাধ। তাদের সঙ্গে আমাদের একটি চুক্তি আছে, সাজা সেখানে যা খেটেছে, দেশে ফিরলে বাকিটা খাটবে। সেটা অপরাধের উপর ভিত্তি করে। মার্ডার করলে তো সে আর ছুটি পাবে না।”
সভায় প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনসহ বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে ঢাকা ও অন্যান্য জেলায় ৪ হাজার ব্যক্তির প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জায়গা প্রস্তুত করছে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রবাসীদের ফেরা-পরবর্তী কার্যক্রম এবং তাদের কোয়ারেন্টিনে নেওয়ার কাজ করবে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ।