1. ph.jayed@gmail.com : akothadesk42 :
  2. admin@amaderkatha24.com : kamader42 :
বুধবার, ২৪ জুলাই ২০২৪, ১২:০৪ অপরাহ্ন

করোনা: উহানে দশ দিনে পরীক্ষা করা হবে কোটি মানুষের

আমাদের কথা ডেস্ক
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ১২ মে, ২০২০

নিউজ ডেস্ক: চীনে উহান শহরের কর্তৃপক্ষ শহরের সমস্ত বাসিন্দা অর্থাৎ এক কোটি দশ লক্ষ মানুষের করোনাভাইরাস পরীক্ষার পরিকল্পনা নিচ্ছে।

রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এ খবর দিয়ে বলেছে পরিকল্পনা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। তবে উহানের প্রত্যেকটি এলাকাকে বলা হয়েছে কীভাবে তারা এলাকার প্রতিটি মানুষকে দশদিনের মধ্যে পরীক্ষা করতে পারবে তার বিস্তারিত পরিকল্পনা জানাতে হবে।

উহানে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয় এবং গত সপ্তাহ শেষে সেখানে আবার নতুন করে ছয়জন পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে।

এর আগে, তেসরা এপ্রিলের পর থেকে সেখানে কোন নতুন সংক্রমণের ঘটনা ধরা পড়েনি।

এগারো সপ্তাহ ধরে কঠোর লকডাউনে থাকার পর ৮ই এপ্রিল থেকে সেখানে লকডাউন তুলে নেওয়া শুরু হয়।

কিছু সময় ধরে মনে হচ্ছিল সেখানে জীবনযাত্রা আবার স্বাভাবিক হয়ে আসছে। স্কুল খুলেছিল, দোকানপাট ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছিল এবং গণপরিবহনও খুলে দেয়া হয়েছিল।

কিন্তু একটি আবাসিক ভবন এলাকা থেকে শুরু হয়ে একগুচ্ছ মানুষের মধ্যে আবার নতুন করে সংক্রমণ দেখা দেয়ায় শহরটিতে জনজীবন স্বাভাবিক হয়ে ওঠা এখন আবার নুতন করে ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

‘দশ দিনের লড়াই’
দ্য পেপার নামে সংবাদপত্রের এক রিপোর্টে সেখানকার অভ্যন্তরীন একটি নথিকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে শহরের প্রতিটি এলাকার প্রত্যেক মানুষকে দশদিনের মধ্যে পরীক্ষা করার পরিকল্পনা তৈরি করে তা মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যে পেশ করতে হবে।

প্রত্যেক এলাকায় বাসিন্দার সংখ্যা হিসাবে নিয়ে এবং ঐ এলাকায় বর্তমানে সক্রিয়ভাবে সংক্রমণ ছড়ানোর ঘটনা ঘটেছে কি না তা বিবেচনায় নিয়ে তাদের নিজস্ব পরিকল্পনা তৈরি করতে বলা হয়েছে।

এই নথিতে এই পরীক্ষা পরিকল্পনার নাম দেয়া হয়েছে ‘দশ দিনের লড়াই’। এতে আরও বলা হয়েছে পরীক্ষার সময় বয়স্ক মানুষ এবং যারা গাদাগাদি করে এক আবাসস্থলে থাকে তাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।

তবে গ্লোবাল টাইমস নামে এক সংবাদপত্র উর্ধ্বতন স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বলছে গোটা শহরের প্রতিটি মানুষকে পরীক্ষা করা অসম্ভব এবং বিশাল ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার।

উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝংনান হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটের পরিচালক পেং ঝিয়ং বলেছেন শহরের গোটা জনগোষ্ঠিকে পরীক্ষা করার বদলে স্বাস্থ্যকর্মী, যারা ঝুঁকির মুখে এবং যারা কোন আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছে তাদের লক্ষ্য করে এই পরীক্ষা কার্যক্রম চালানো উচিত।

উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন পরিচালক বলেছেন যে উহানের জনগোষ্ঠির একটা বড় অংশ – অর্থাৎ ৩০ থেকে ৫০ লাখ মানুষকে ইতোমধ্যেই পরীক্ষা করা হয়ে গেছে। এবং বাকি ৬০ থেকে ৮০ লাখ মানুষকে দশদিনের মধ্যে পরীক্ষা করার “সক্ষমতা” উহানের আছে।

চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ওয়েবো-তে মানুষ প্রশ্ন তুলছে মাত্র দশদিনের মধ্যে এত বিপুল সংখ্যক মানুষকে পরীক্ষা করা সম্ভব কি না।

“এত লোককে পরীক্ষা করা অসম্ভব,” বলছেন এক ব্যক্তি। তিনি আরও প্রশ্ন করেছেন এর জন্য খরচ হবে কত?

আরেকজন বলছেন চীনের অন্যান্য অংশের সঙ্গে যোগাযোগ আবার খুলে দেবার আগে উহানের এই পরীক্ষা কার্যক্রম চালানো উচিত ছিল।

কোন ঝুঁকি নেয়া নয়
বেজিং থেকে বিবিসির সংবাদদাতা স্টিফেন ম্যাকডোনেল বলছেন উহানে এই মড়কের সূত্রপাত হয়েছিল। এই উহান যখন ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে এনে লকডাউন তুলল, তখন মানুষ কিছুটা স্বস্তিবোধ করেছিল যে তারাও এই ত্রাস থেকে একদিন মুক্তি পাবে। ফলে প্রথম লকডাউনে যাওয়া ওই শহরে আবার ভাইরাস ফিরে আসার খবরটা মানুষকে হতাশ করবে।

চীনা সরকারের লক্ষ্য ছিল দ্বিতীয় দফা সংক্রমণের ঝুঁকি ঠেকানোকে অগ্রাধিকার দেয়া।

ফলে উহানে তিন দিন আগে নতুন সংক্রমণের ঘটনা ধরা পড়ায় ১০০০ কিলোমিটার দূরে বেজিংয়ে কর্তৃপক্ষ যে নতুন করে উদ্বেগে পড়বে সেটাই স্বাভাবিক।

এখন যে আবাসিক এলাকায় ৮৯ বছর বয়স্ক এক বৃদ্ধের থেকে পাঁচজন সংক্রমিত হয়েছে, আগে বলা হয়েছিল তিনি পজিটিভ নন, কিন্তু তিনি জীবাণুবাহক হতে পারেন। ঐ আবাসিক ভবনের ম্যানেজারকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।

বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন এভাবে স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করার একটা উল্টো বিপদও আছে। এধরনের পদক্ষেপ নিলে তারা হয়ত ভবিষ্যতে সংক্রমণের খবর চেপে যাবে।

সমস্যা ঢাকা না রেখে তা মোকাবেলার দিকে নজর দেয়াটা যেহেতু এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই স্টিফেন ম্যাকডোনেল মনে করেন খারাপ খবর কেউ দিলে তাকে শাস্তি দেয়ার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার বিষয়টিও চীনা কর্তৃপক্ষকে এখন বিবেচনা করে দেখতে হবে।

চীনের পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটির সাতজন সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ব্যক্তি গত সপ্তাহেই একটা বৈঠক করেছেন এধরনের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে আগাম সতর্ক সংকেত ব্যবস্থা কীভাবে আরও উন্নত করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করতে।

চীনে সোমবার মাত্র একজনের আক্রান্ত হবার খবর দেয়া হয়েছে যার ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা সেখানে দাঁড়িয়েছে ৮২,৯১৯ এবং মৃতের সংখ্যা বলা হয়েছে ৪,৬৩৩।

উহান স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে সেখানে কয়েকশ মানুষ উপসর্গ না দেখালেও জীবাণু বহন করছে বলে তাদের ধারণা এবং তাদের ওপর তারা নজর রাখছে।

সূত্র: বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

এই জাতীয় আরো খবর
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Maintained By Macrosys