নিউজ ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন পালিত হচ্ছে আজ। এ উপলক্ষে শান্তি ও ভালোবাসার বাণী দিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। তিনি বলেন, ‘ঈশ্বর এখনও আমাদের সবাইকে ভালোবাসেন। তার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হন না আমাদের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ বলে পরিচিত ব্যক্তিটিও।’
বড়দিনের আগের রাতে মঙ্গলবার ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় সমবেত হাজার হাজার মানুষের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে একথা বলেন পোপ। সূত্র বিবিসি।
তার কথায়, মানুষ যত গরিব বা পাপীই হোক না কেন তাতে ইশ্বরের অসীম ভালোবাসায় কোনো কমতি হবে না। মানুষ ভুল চিন্তা করতে পারে। সবকিছু তছনছ করে ফেলতে পারে। কিন্তু ঈশ্বর ভালোবাসা বিলিয়েই যান।
একথার মধ্য দিয়ে পোপ গির্জায় শিশু যৌন নিপীড়ন ও কেলেঙ্কারির দিকে ইঙ্গিত করেছেন এবং গির্জায় ত্রুটিপূর্ণ কোনো কাজের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের সেই স্বর্গীয় ভালোবাসার ছায়া থেকে কাউকে দূরে সরে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
‘আমরা প্রায়ই ভাবি ভালো কাজ করলে ঈশ্বর আমাদের ভাল করবেন, আর খারাপ করলে তিনি আমাদেরকে সাজা দেবেন। কিন্তু ঈশ্বর আসলে এমন নন। তার ভালোবাসা থেকে কেউ বঞ্চিত হয় না। তিনি এখনও আমাদের ভালোবাসেন।’বলেন পোপ।
সুনির্দিষ্টভাবে কিছু না বললেও চার্চের যৌন নিপীড়ন কেলেঙ্কারি এবং আর্থিক অনিয়মের সাম্প্রতিক সমস্যাগুলোর কথা পোপ তার ভাষণে উল্লেখ করেছেন।
তিনি ভক্তদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আসুন আমরা ঈশ্বরের কথা মাথায় রেখে তার ধ্যানে মগ্ন হয়ে ঐশ্বরিক সেই অপার ভালোবাসার ছায়াতলে নিজেদের সমর্পণ করি।’
বড়দিন পালনকালে প্রথা অনুযায়ী বিশ্বকে বার্তা দিতে পোপ বুধবার আবারো সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় উপস্থিত হবেন। পোপের এই বার্ষিক ‘উরবি এট অরবি’ (শহর ও বিশ্বের প্রতি) ভাষণ শুনতে হাজার হাজার অনুসারী বাসিলিকা গির্জায় জড়ো হয়।
গির্জা কর্তৃপক্ষ এর আগে ভুক্তভোগীদের সামাজিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষার অজুহাতে যৌন নিগ্রহের মামলাগুলি গোপনে পরিচালনা করতেন। কিন্তু নতুন প্যাপাল সেসব বিধিনিষেধ তুলে দেয়ার ফলে এসব যৌন নিগৃহের প্রতিবেদনগুলো প্রকাশ হতে শুরু করেছে।
পোপ ফ্যান্সি ভ্যাটিকানের শিশু পর্নোগ্রাফির সংজ্ঞাও বদলে দিয়েছেন। তিনি নির্যাতনের শিকার হওয়া শিশুদের বয়স কমিয়ে ১৪ বা ১৮ বছরের কম বলে উল্লেখ করেছেন।
বিশ্বজুড়ে প্রবীণ পাদ্রিদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের হাজার হাজার রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর গির্জাগুলোর পবিত্র ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে গির্জাগুলোকে এই সংকট থেকে উদ্ধারে নেতৃত্ব প্রদান ও কার্যক্ষম সমাধান তৈরি করার জন্য গুরুতর চাপের মুখোমুখি হয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস।