আওয়ামী লীগের দুর্দিনে তৃণমূলের শেলুরা’ই দলের শক্তি
বিশেষ প্রতিনিধি#
দল হিসেবে আওয়ামী লীগ এখন এক কঠিন সময় পার করছে। ৭৫পরবর্তী বাংলাদেশের থেকেও ২৫ এর বাংলাদেশে আরো বেশি কঠিন সময় মোকাবেলা করতে হচ্ছে দলটির নেতাকর্মীদের। শিকার হতে হচ্ছে মব জাস্টিস’র।
তবে অতীতে খাদের কিনারে গিয়েও দলটি আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে পূর্ণোদ্যমে শক্তিমত্তা নিয়েই। আর সেই শক্তিমত্তাই “জোগান” “তৃণমূলের নেতাকর্মীরা”। দেশ ও দলের দুর্দিনে আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মীরাই বারবার ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন। দলের কাছে এই তৃণমূলের নেতা কর্মীদের চাওয়া এবং পাওয়া খুবই কম। দলের পাশাপাশি দেশকে ভালোবেসে নিজের জীবন বিলিয়ে দিতেও কার্পণ্য করেন না এই তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
সেলিম ওয়াদা শেলু ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদে থাকলেও নিজেকে একজন তৃণমূলের কর্মী হিসেবে পরিচয় দিতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ ও গর্ববোধ করেন। দুই যুগের কাছাকাছি সময়ে প্রবাসী হয়েছেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করে হৃদয়ে বাংলাদেশ আর বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করে আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন প্রবাস জীবনের শুরু থেকেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে নানা চাপের কারণে প্রবাসেও আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীরাই যখন “নিশ্চুপ” তখন দলে শক্তি আর প্রাণসঞ্চার করছেন এই “তৃণমূলের শেলুরা”। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দলের পক্ষে যখন একটি পোস্ট দিতে গিয়ে অনেক নেতা কর্মীকে নানা কিছু ভাবতে হয় এমনকি অনেকেই
পোস্ট দিতে ভয় পান তখন শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট নয় ;সোচ্চার কন্ঠে “জয় বাংলা’ বলে এগিয়ে আসেন তৃণমূলের এই নেতারা।
তৃণমূলের এই আওয়ামী লীগের নেতার বাড়ি বৃহত্তর সিলেটের মৌলভীবাজারের রাজনগরে। কিশোর জীবন থেকেই হৃদয়ে লালন করতেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ আর শেখ হাসিনাকে। আর সেই ভালোবাসা থেকেই এখনো আছেন আওয়ামী লীগের সাথে।
দল যখন ক্ষমতায় তখন “হাইব্রিডদ’র” “দাপট’র” কারণে তৃণমূলের এই শেলুরা অনেক সময় দলে জায়গা না পেলেও “দুর্দিনে” সবচেয়ে বেশি দলে “শক্তি যোগান” ‘তারাই”। ক্ষমতায় আর সুদিনের যেকোনো মিছিল মিটিংয়ে যেখানে শয়ে শয়ে নেতা কর্মীদের উপস্থিতি দেখা যেত সেখানে পরিস্থিতি বদলে যাওয়ায় হাতেগোনা কয়েকজনকে এখন মিছিল মিটিংয়ে পাওয়া যায় যেখানে উপস্থিত থাকেন তৃণমূলের এই শেলুরা।
এক প্রশ্নের জবাবে তৃণমূলের এই নেতা বলেন, “আপনার নিশ্চয়ই মনে থাকবে ,আমাদের সভানেত্রী বঙ্গবন্ধু জাতির জনক শেখ মুজিবের কন্যা শেখ হাসিনা একটি কথা প্রায়ই বলতেন- “দুঃসময় এলে দুর্দিনের এই তৃণমূলের নেতা কর্মীরাই আমার দলের সবচেয়ে বড় শক্তি যোগাবে” সেই কথাটি আমার এখনো কানে বাজে। দেশ ও দলকে ভালোবেসে আওয়ামী লীগ করি আর সেই ভালোবাসা থাকবে আজন্ম, আমৃত্যু। আমার কোন চাওয়া পাওয়া নেই দলের কাছে। প্রয়োজনে দেশ ও দলের জন্য বুক পেতে দিতে কখনোই কার্পণ্য বোধ করব না।আওয়ামী লীগকে ভালোবেসে ১৯৭১ সালে আমার মামা যেমন জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন আমিও প্রয়োজন হলে জীবন দিয়ে আওয়ামী লীগের পতাকা ধরে রাখবো ইনশাআল্লাহ । মনে রাখবেন আওয়ামীলীগ আবারো ঘুরে দাঁড়াবে আর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আবারও দেশে ফিরবেন এবং তিনি অবৈধ ইউনুস গংদের বিচার করবেন এই বাংলার মাটিতে যেমন করেছিলেন একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের।
সম্প্রতি দল হিসেবে আওয়ামী লীগের সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের এই নেতা বলেন, “সুদী মহাজন ইউনুস’ই অবৈধ । তৃণমূলের নেতা কর্মীদের নিয়ে গণমানুষের দল আওয়ামীলীগ আবারো রাজপথে নামবে এবং দেখবেন একসময় এই ইউনুস গংরাই দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।”
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশমাতৃকার স্বাধিকার আন্দোলন মুক্তিযুদ্ধ এবং গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারসহ দেশের সংকটকালীন সময়ে সব সময়ই আন্দোলন সংগ্রামে ছিল গণমানুষের দল আওয়ামী লীগ। আর এই দলের শক্তি ও প্রাণসঞ্চারে কাজ করেন দলটির নেতাকর্মীরা বিশেষ করে সংকটকালীন সময়ে “তৃণমূলের নেতাকর্মীরা”।